নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় - মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF
মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় সাজেশন – Madhyamik Bengali Suggestion PDF : নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন ও অধ্যায় ভিত্তিতে প্রশ্নোত্তর নিচে দেওয়া হল। এবার পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় বা মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় ( WB Madhyamik Bengali Suggestion PDF | West Bengal Madhyamik Bengali Suggestion PDF | WBBSE Board Class 10th Bengali Question and Answer with PDF file Download) এই প্রশ্নউত্তর ও সাজেশন খুব ইম্পর্টেন্ট । আপনারা যারা আগামী মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য বা মাধ্যমিক বাংলা – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় | Madhyamik Bengali Suggestion PDF | WBBSE Board Madhyamik Class 10th (X) Bengali Suggestion Question and Answer খুঁজে চলেছেন, তারা নিচে দেওয়া প্রশ্ন ও উত্তর ভালো করে পড়তে পারেন।
পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর বাংলা সাজেশন (West Bengal Madhyamik Bengali Suggestion PDF / Notes) নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর – MCQ প্রশ্নোত্তর, অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর (SAQ), সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর (Short Question and Answer), ব্যাখ্যাধর্মী বা রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর (descriptive question and answer) এবং PDF ফাইল ডাউনলোড লিঙ্ক নিচে দেওয়া রয়েছে।
Answer: নদীর পরিপূর্ণতা তার জলরাশির উচ্ছলতায় । নদেরচাদ বর্ষার জলে পুষ্ট নদীর যে চাঞ্চল্য লক্ষ করেছিল , সেই পরিপূর্ণতার কথা এক্ষেত্রে বলা হয়েছে ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের নায়ক নদেরচাদের কর্মস্থল থেকে মাইলখানেক দুরে তার প্রিয় নদীটি অবস্থিত ছিল । এখানে সেই নদীটির কথা বলা হয়েছে ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে ‘ আজ ‘ বলতে পাঁচদিনের অঝোরধারায় বৃষ্টির পর যেদিন নদেরচাঁদ প্রথম নদীকে দেখতে গিয়েছিল , সেই দিনটির কথা বলা হয়েছে ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে সারাবছর জলাভাবে ভুগতে থাকা ক্ষীণস্রোতা নদীটি একটানা পাঁচদিনের বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে উঠেছিল । এটাই নদীর খেপে যাওয়ার কারণ ।
Answer: নদেরচাঁদ তার কর্মস্থলের অনতিদূরে চার বছর ধরে একটি ক্ষীণস্রোতা নদীকে দেখে আসছে । টানা পাঁচ দিনের বৃষ্টিতে সেই নদী ফুলেফেঁপে উঠলেও দাঁড়িয়ে সে সেই ক্ষীণস্রোতা নদীটির কথাই ভাবছিল ।
Answer: নদেরচাদের কর্মক্ষেত্রের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ক্ষীণস্রোতা নদীটিকে সে প্রতিদিন দেখত । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণে সে নদীর জল ফুলেফেঁপে ভয়ংকর রূপ ধারণ করলে চার বছরের চেনা নদীটিকে নদেরচাদের অচেনা লাগে ।
Answer: ‘ সে ’ হল মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাঁদ । ” নদেরচাঁদ তার কর্মক্ষেত্র থেকে মাইলখানেক দূরের নদীটিকে প্রতিদিন দেখত । কারণ এমনই এক নদীর ধারে তার শৈশব কেটেছিল ।
Answer: স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদের তার কাজের অবসরে কর্মক্ষেত্র থেকে মাইলখানেক দূরে নদীর উপরকার ব্রিজের মাঝামাঝি ধারকস্তম্ভের শেষ প্রান্তে এসে বসল ।
Answer: নদেরচাদের নদীর সঙ্গে সখ্য ছোটোবেলার , তার গ্রামে থাকাকালীন । কর্মস্থলে এসেও সে তা ভুলতে পারেনি । তাই নদীকে সে প্রতিদিন না দেখে থাকতে পারত না ।
Answer: নদীর প্রতি অমোঘ আকর্ষণে নদেরচাঁদ প্রতিদিন নদীকে দেখতে যেত । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে তাতে ছেদ পড়ে । ষষ্ঠ দিনে বৃষ্টি কমলে সে আবার সেই একই জায়গায় গিয়ে বসে । ‘ আজ ‘ বলতে উক্ত দিনটিকে বোঝানো হয়েছে ।
Answer: বৃষ্টি শেষে নদীর ধারকস্তম্ভে বসে নদেরচাদ নদীকে দেখছিল । নদীর জলরাশি মাঝেমধ্যে ফুলেফেঁপে উঠছিল । সেই ফুলেফেঁপে ওঠা জলরাশিকে স্পর্শ করার ইচ্ছার কথা বলা হয়েছে ।
Answer: ক্ষীণস্রোতা নদীর উপর নির্মিত ব্রিজের ধারকস্তম্ভগুলিতে বর্ষার সময় নদীর স্রোত বাধা পায় এবং ফেনিল আবর্ত রচনা করে । তাই জল উঁচুতে উঠে আসে ।
13 ‘ নদেরচাদের ভারী আমোদ বোধ হইতে লাগিল । -নদেরচাঁদের আমোদ বোধ হওয়ার কারণ কী ?
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্প অনুসারে ব্রিজের ধারকস্তম্ভে বসে নদেরচাঁদ বারবার স্তম্ভের গায়ে আঘাত খেয়ে বর্ষণপুষ্ট নদীর ফুলে ওঠা জল ছুঁতে চেষ্টা করছিল । এতেই সে আমোদিত হয়ে উঠেছিল ।
Answer: ‘ সে ‘ হল ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ ।
চিরপরিচিত ক্ষীণকায় নদীকে বর্ষার জলে ফুলেফেঁপে উঠতে দেখে উৎফুল্ল নদেরচাঁদ পুরোনো চিঠি সেই উন্মত্ত স্রোতের মধ্যে ছুড়ে দিয়েছিল ।
Answer: বর্ষণপুষ্ট জলে ক্ষীণস্রোতা নদীর উন্মত্ততা লক্ষ করে নদেরচাদ তার প্রিয়ার চিঠি স্রোতের মধ্যে ফেলে দেয় । এখানে সেই চিঠির কথাই বলা হয়েছে ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গঙ্গে নদেরচাঁদ শীর্ণকায় যে – নদীকে দেখে অভ্যস্ত ছিল তা বর্ষণপুষ্ট হয়ে প্রতিনিয়ত উম্মত্ত জলপ্রবাহের আবর্ত রচনা করায় সেই জলরাশিকে জীবন্ত বলে মনে হয়েছিল ।
Answer: একটানা বর্ষায় ফুলেফেঁপে ওঠা নদীর উম্মত্ত জলরাশিতে পুরোনো চিঠি খেলার ছলে ছিঁড়ে ছিঁড়ে ফেলেছিল নদেরচাঁদ । এখানে সেই খেলার কথা বলা হয়েছে ।
Answer: বর্ষার সঙ্গে বিরহের সুর মিলিয়ে বাড়ি থেকে বহুদুরে কর্তব্যরত স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ তার বউকে পাঁচ পাতার একটি চিঠি লিখেছিল । এখানে সেই চিঠির কথাই বলা হয়েছে ।
Answer: উন্মত্ত নদীর জলে , স্ত্রীকে লেখা বিরহ – বেদনাপূর্ণ চিঠির এক – একখানি পাতা ছিঁড়ে দুমড়ে – মুচড়ে ফেলে দেওয়ার সময় নদেরচাদ স্ত্রীর প্রতি মমতাবোধ করেছিল ।
Answer: এখানে ‘ লোভ ’ বলতে উন্মত্ত নদীর সঙ্গে নদেরচাদের খেলার লোভের কথা বলা হয়েছে । সেই লোভের বশবর্তী হয়ে নদেরচাঁদ স্ত্রীকে লেখা চিঠির পাতাগুলো একের পর এক নদীতে ছুড়ে ফেলেছিল ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে স্ফীতকায় জলরাশির সঙ্গে খেলতে খেলতে আত্মহারা নদেরচাঁদ প্রবল বৃষ্টিতে ভিজতে থাকলেও এক অজানা আত্মিক টানে নদীর ধার ছেড়ে উঠল না ।
Answer: ব্রিজের ধারকস্তম্ভের ওপর বসে উত্তাল নদী থেকে উঠে আসা শব্দের সঙ্গে বৃষ্টির শব্দ মিশে তৈরি হওয়া শব্দ শুনতে শুনতে নদেরচাদের মন থেকে ছেলেমানুষি আমোদ মিলিয়ে গিয়েছিল ।
Answer: নদী আর বৃষ্টির শব্দ মিলেমিশে নদেরচাঁদকে আচ্ছন্ন করে দিয়েছিল । এমন সময় ব্রিজের ওপর দিয়ে সশব্দে একটা ট্রেন চলে যায় । উদ্ধৃতাংশে ‘ তারপর ‘ বলতে এর পরকেই বুঝিয়েছে ।
Answer: বর্ষার জলে উদ্বৃত্ত নদীর রোষে – ক্ষোভে ফুঁসে ওঠা রূপ দেখে দিশেহারা নদেরচাদের ভয় হয়েছিল নদীর আর্তনাদি জলরাশি যেন গোটা ব্রিজটিকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদের চাঁদের ক্ষোভে উন্মত্ত নদীর আর্তনাদি জলরাশির কয়েক হাত উঁচুতে ধারকস্তম্ভের ওপর এমন নিশ্চিন্ত মনে বসে থাকা উচিত হয়নি ।
Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পের স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ চারটে পঁয়তাল্লিশের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি রওনা করিয়ে , তার সহকারীকে কর্তব্যভার বোঝানোর সময় তাকে এ কথা বলেছে ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পে স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ চারটে পঁয়তাল্লিশের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে পাস করিয়ে নতুন সহকারীকে তার দায়িত্ব বুঝিয়ে চলে যাবার কথা জানায় । উত্তরে সহকারী সম্মতিসূচক উক্তিটি করে ।
Answer: নদেরচাদ বিকেলের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিকে পাস করিয়ে , দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার সময় সহকারীকে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে সহকারী উদ্ধৃত উক্তিটি করেন ।
Answer: নদেরচাদের ছোটো থেকেই নদীর প্রতি বড়ো টান । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জন্য সে নদীর কাছে যেতে পারেনি । তাই বৃষ্টি থামতেই নদীকে দেখার জন্য সে উৎসুক হয়ে উঠল ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে অবিশ্রান্ত বৃষ্টির কারণে নদীকে দেখতে না পেয়ে নদেরচাদের মধ্যে যে আকুলতা সৃষ্টি হয়েছিল , তা সাধারণত কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে দেখা যায় না । এই আগ্রহ বা ঔৎসুক্যবোধকেই ‘ ছেলেমানুষের মতো ‘ বলা হয়েছে ।
Answer: এ কথার মধ্য দিয়ে নদেরচাদের সঙ্গে নদীর গভীর বন্ধুত্বকে বোঝানো হয়েছে । একটানা পাঁচ দিন বৃষ্টির পরে নদীকে দেখার জন্য তার মধ্যেকার আকুলতাকে প্রকাশ করছে এই উদ্ধৃতি ।
Answer: ‘ তা হোক ’ শব্দটির সাহায্যে বৃষ্টির পূর্বাভাসকে উপেক্ষা করাকে বোঝানো হয়েছে । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণের শেষে নদীকে দেখার সুযোগ নদেরচাঁদ কোনো মতেই হাতছাড়া করতে চায় না ।
Answer: পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির ফলে নদেরচাঁদের নদী দেখা হয়নি । বৃষ্টি থামলে নদীকে দেখতে যাওয়ার সময় দু – দিকের মাঠঘাট দেখে সে বর্ষণ – পুষ্ট নদীর পরিপূর্ণ রূপের কথা ভাবছিল ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহে ‘ নদেরচাদের নদীকে নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের ঔৎসুক্যবোধ অনেকটা ছেলেমানুষের মতো । ত্রিশ বছর বয়সে নদীকে নিয়ে নদেরচাদের এতটা মায়া একটু অস্বাভাবিকই লাগে ।
Answer: নদেরচাঁদ একজন স্টেশনমাস্টার । মেল , প্যাসেঞ্জার , মালগাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করা তার কাজ । যন্ত্রের গতি নির্ধারণ যার কাজ , তার এতটা আবেগপ্রবণ হওয়াটা খুব স্বাভাবিক লক্ষণ নয় ।
Answer: নদেরচাঁদের নদী সম্পর্কে একটা শিশুসুলভ উন্মাদনা ছিল । নদীর সামান্য অদর্শনে সে অধৈর্য হত । অন্যের কাছে এটা পাগলামি মনে হলেও , সে নিজে এই পাগলামিতে আনন্দ পেত ।
Answer: প্রাপ্তবয়স্ক নদেরচাদ ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজের সঙ্গে যুক্ত । তার নদীকে দেখার মতো শিশুসুলভ ঔৎসুক্য সাজে না – এ কথা সে মনকে বোঝাতে পারে না ।
Answer: নদেরচাদ স্টেশনমাস্টারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিল । বর্ষণপুষ্ট নদীকে একটানা পাঁচ দিন না দেখার জন্য তার মধ্যে যে শিশুসুলভ উন্মত্ততা দেখা দিয়েছিল সেটাই অস্বাভাবিক ।
Answer: নদেরচাদের নদীর প্রতি আকর্ষণ , শিশুসুলভ পাগলামি হলেও এর পিছনে তার একটি নিজস্ব যুক্তি ছিল । কারণ তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা নদীর ধারেই । তাই তার নদীর প্রতি এই ভালোবাসা আবাল্য ।
Answer: শৈশব , কৈশোর ও প্রথম যৌবনে মানুষ বুদ্ধি – বিবেচনার পরিবর্তে ব্যক্তিমনের আবেগ – আকাঙ্ক্ষাকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয় । তাই তার কাছে তখন ছোটো – বড়ো , ভালোমন্দের চেয়ে বেশি মূল্যবান নিজের ভালোলাগা ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পের নায়ক নদেরচাদের ছোটোবেলা থেকেই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীটির সঙ্গে ভারি বন্ধুত্ব । একবার অনাবৃষ্টিতে নদীর জলস্রোত প্রায় শুকিয়ে যেতে বসায় সে কেঁদে ফেলেছিল ।
Answer: নদেরচাঁদ যে – নদীর ধারে জন্মেছে , বড়ো হয়েছে , যাকে ভালোবেসেছে , সেই নদীটি বর্ষণপুষ্ট নদীর মতো বড়ো ছিল না । ক্ষীণস্রোতা নদীটি নদেরচাদের কাছে ছিল অসুস্থ , দুর্বল আত্মীয়ার মতো ।
Answer: নদেরচাদের আবাল্যের সঙ্গী নদীটির স্রোতধারা ছিল অতি ক্ষীণ । তাই অসুস্থ , দুর্বল আত্মীয়ের প্রতি মানুষের যেমন সহানুভূতি ও মমতা থাকে , নদেরচাদের ও নদীটির প্রতি তাই ছিল ।
Answer: আলোচা উদ্ধৃতিটিতে নদেরচাদের দেশের সরু , ক্ষীণস্রোতা নদীটির সম্পর্কে এ কথা বলা হয়েছে । আবাল্যের সঙ্গী এই নদীটিকে সে নিজের অসুস্থ ও দুর্বল আত্মীয়ার মতো গণ্য করত ।
Answer: পরমাত্মীয়কে দুরারোগ্য রোগে মারা যেতে দেখলে মানুষ যেমন কাঁদে , নদেরচাঁদও অনাবৃষ্টিতে তার গ্রামের ক্ষীণস্রোতা নদীটিকে শুকিয়ে যেতে দেখে তেমনি কেঁদে ফেলেছিল ।
Answer: ত্রিশ বছর বয়সি নদেরচাদের নদীর প্রতি তীব্র ভালোবাসা অস্বাভাবিক হলেও নদেরচাঁদ প্রকৃতিপ্রেমী ও আবেগপ্রবণ । তাই সংবেদনশীল শিল্পী চরিত্রদের মতোই সে নদীকে ভালোবেসেছে ।
Answer: নদীর প্রতি নদেরচাঁদের তীব্র আকর্ষণ বাস্তববাদী মানুষের মনে প্রশ্ন জাগাতে পারে । তাই একটা কৈফিয়ত দেওয়া যে প্রয়োজন , তা সে অনুভব করে ।
Answer: পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পরে নদীর ধারে গিয়ে আপাতশাস্ত নদীর উন্মত্ত রূপ দেখে নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্প অনুসারে , ‘ প্রথমবার ‘ বলতে পাঁচ দিন মুশলধারে বৃষ্টির পর নদেরচাঁদ প্রথম যখন নদীকে দেখে ও তার উন্মত্ততা অনুভব করে , সে কথাই বোঝানো হয়েছে ।
Answer: নদেরচাঁদ বর্ষণপুষ্ট নদীর পঙ্কিল জলস্রোতের চাঞ্চল্য দেখেই বুঝেছিল সারাবছরের ক্ষীণস্রোতা নদীটির বর্ষার জলে পরিপূর্ণতার কাহিনি যেন তার চাঞ্চল্যের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হচ্ছিল ।
Answer: (A) চার বছর
Answer: (B) সে একটি সংকীর্ণ ক্ষীণস্রোতা নদীর কথা ভাবছিল
Answer: (B) ইট , সুরকি ও সিমেন্ট
Answer: (D) ব্রিজের ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে বসে
Answer: (A) ধারকস্তম্ভে বাধা পাওয়ায়
Answer: (B) হাত বাড়িয়ে স্পর্শ করা যায়
Answer: (C) নদীর স্ফীতরূপ দেখে
Answer: (A) পুরোনো চিঠি
Answer: (D) উন্মত্ততার জন্য
Answer: (D) দু – দিন
Answer: (A) পাঁচ
Answer: (A) বিরহবেদনা
Answer: (B) তিনেক
Answer: (C) মুশলধারায়
Answer: (D) সে নদীর শব্দ শুনছিল
Answer: (B) তার মনে ভয় উপস্থিত হল
Answer: (A) ভয়ংকর – সুন্দর
Answer: (A) সেই শব্দ তাকে নৈসর্গিক নিস্তব্ধতা থেকে বাস্তবে ফিরিয়ে এনেছিল
Answer: (C) নদীর প্রতিহিংসা
Answer: (D) সে নদীর প্রতিহিংসার শিকার হতে পারত
Answer: (C) বন্দিদশা থেকে মুক্তি
Answer: (B) নদী
Answer: (A) নতুন রং করা ব্রিজটির জন্য
Answer: (B) ট্রেনের তলায়
Answer: (C) মানুষ বাঁধ ও ব্রিজ তৈরি করে তার গতি রুদ্ধ করেছে বলে
Answer: (D) ৭ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার
Answer: (A) চারটে পঁয়তাল্লিশ
Answer: (B) নতুন সহকারী
Answer: (B) প্যাসেঞ্জার ট্রেন
Answer: (D) এক মাইল
Answer: (A) পাঁচ দিন ধরে
Answer: (B) বিকেল
Answer: (B) পাঁচ দিন
Answer: (A) ছেলেমানুষের মতো
Answer: (C) নদীকে না দেখলে
Answer: (C) মাঠঘাট
Answer: (A) রেলের উঁচু বাঁধ দিয়ে
Answer: (B) নদীর বর্ষণ – পুষ্ট মূর্তি
Answer: (C) স্টেশনমাস্টার
Answer: (C) ত্রিশ বছর
Answer: (A) প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই স্বভাব প্রায় দেখা যায় না
Answer: (C) আনন্দ হয়
Answer: (D) নদীর ধারে তার জন্ম
Answer: (B) বড়ো – ছোটোর হিসেব করে না
Answer: (C) অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়ার মতো
Answer: (B) অনাবৃষ্টির বছর
Answer: (A) তাকে বাঁচাতে না পারার অসহায়তায়
Answer: (B) সখ্য
Answer: (C) নদী যেন খেপে গেছে
Answer: (B) পরিপূর্ণতার আনন্দের
Answer: (D) পঙ্কিল
Answer: (D) সংকীর্ণ ক্ষীণস্রোতা
Answer: সে ’ বলতে এখানে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নদীর বিদ্রোহ গল্পের ত্রিশ বছর বয়সি স্টেশনমাস্টার নদেরচাদকে ‘ সে ‘ কে বোঝানো হয়েছে । প্রশ্নোত ব্যক্তি কাদের একজন [ ] নদেরচাদ একটি স্টেশনের স্টেশনমাস্টার ছিল । স্টেশনমাস্টারের দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । কারণ দিনরাত সব মেল , প্যাসেঞ্জার ট্রেন ও মালগাড়ির আসা – যাওয়া নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব যাদের হাতে , তাদেরই একজন হলেন স্টেশনমাস্টার । কাজেই এই দায়িত্বপ্রাপ্ত নদেরচাঁদের নদী নিয়ে পাগলামি মানায় না বলে লেখক জানিয়েছেন ।
Answer: নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাঁদের বয়স ত্রিশ । সে একটি দায়িত্বপূর্ণ পদে কর্মরত । এইরকম অবস্থায় নদীর প্রতি তার এই বাড়াবাড়ি রকমের ভালোবাসা যে তাকে মানায় না তা সে বোঝে ।
নদেরচাঁদের জন্ম , বেড়ে ওঠা ও ভালোবাসা সব কিছুই নদীকে ঘিরে । নদীকে নিয়ে সে এক ভাবের জগতে বাস করত । নদীর প্রতি এত বেশি মায়া অস্বাভাবিক জেনেও ; নদীর অদর্শনে সে অতৃপ্ত থাকত । তার পক্ষে এমন ঔৎসুক্য ঠিক নয় এ কথা টের পেলেও সে নিজেকে বোঝাতে পারত না । বরং নিজের এই পাগলামিতে সে এক অনাবিল আনন্দ উপভোগ করত ।
Answer: গ্রামবাংলার ছেলে নদেরচাদের জন্ম , শৈশব , বেড়ে ওঠা , আশা – আকাঙ্ক্ষা সবই নদীকে কেন্দ্র করে । নদীর সঙ্গে তার আত্মিক সম্পর্ক । নদীর ক্ষীণধারা দেখে বর্ষণপষ্ট স্ফীতকায় নদী তার মনে পুলক জাগায় । নদীর প্রতি এইরূপ প্রেম তার যে সাজে না এ কথা সে বুঝলেও তার মনকে বোঝাতে পারে না । কোথাও যেন নিজের এই পাগলামিতে সে আনন্দ উপভোগ করে ।
Answer: নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাদের জন্ম , বেড়ে ওঠা— সবই নদীকে ঘিরে । তার দেশের যে শীর্ণকায় ক্ষীণস্রোতা নদীটিকে কৈফিয়তটি বাঁ সে বড়ো ভালোবাসত । সেইজন্য কর্মক্ষেত্রের নদীসহ যে কোনো নদীর প্রতিই তার অস্বাভাবিক মায়া ছিল । নদীকে এমন পাগলের মতো ভালোবাসার জন্য সে এমন কৈফিয়তই দিয়েছিল ।
রেল নিয়ন্ত্রণের মতো দায়িত্বপূর্ণ কাজে যুক্ত একজন প্রাপ্তবয়স্কের নদীকে নিয়ে এমন পাগলামো সকলে স্বাভাবিকভাবে নেবে না তাই নদেরচাদ নিজেই কৈফিয়ত দিয়েছিল ।
Answer: নদেরচাঁদ তার দেশের যে – নদীটির পাশে জন্ম নিয়েছে ও বেড়ে উঠেছে , সেই নদীটি অতি ক্ষীণকায়া । অসুস্থ দুর্বল আত্মীয়ার মতো নদেরচাঁদ তাকে ভালোবাসত । একবার অনাবৃষ্টির সময় সেই নদীর ক্ষীণস্রোত প্রায় শুকিয়ে যেতে দেখে নদেরচাঁদ কেঁদে ফেলেছিল । অন্যদিকে , তার কর্মক্ষেত্র থেকে এক মাইল দূরে যে – নদীটিকে দেখতে নদেরচাঁদ বারবার ছুটে যেত , সেই নদীটি ছিল কর্মক্ষেত্রের নদী তুলনায় বড়ো । বর্ষায় জল পেয়ে সেই নদী ফুলেফেঁপে উঠে দু – কূল ভাসিয়ে দিত ।
Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের মুখ্য চরিত্র গল্পে উদ্ধৃত ব্রিজের পরিচয় । নদেরচাদ যে অখ্যাত স্টেশনের স্টেশনমাস্টার ছিল সেখান থেকে মাইলখানেক দূরে নদীর ওপর যে – নতুন ব্রিজটি তৈরি হয়েছিল এখানে তার কথা বলা হয়েছে । নদেরচাদের স্তম্ভিত ( একটানা পাঁচদিন বৃষ্টির পর নদেরচাদ নদীটিকে দেখে স্তম্ভিত হয়ে যায় । ক – দিন আগে সে নদীর পঙ্কিল জলের যে উল্লাস ও চঞ্চলতা দেখে গিয়েছিল আজ অতিবৃষ্টির পর তা যেন পরিণত হয়ে ভয়ংকরভাবে ফুঁসছে ।
Answer: একটানা পাঁচদিন পর নদীর দিকে প্রথমবার দৃপা করে নদীর পূর্ব প ও পরবর্তী রূপ নদেরচাঁদ স্তম্ভিত হয়ে গেল । বর্ষার জল পেয়ে উচ্ছ্বসিত নদীর পঙ্কিল জলে সে যে উল্লাস ও চঞ্চলতা দেখে গিয়েছিল , একটানা বৃষ্টির পর সেই উল্লাস ও চঞ্চলতা যেন পরিণত হয়েছে ফুঁসতে থাকা ভয়ংকরতায় । আগের চঞ্চলতায় ছিল পরিপূর্ণতার উল্লাস ; কিন্তু এখন নদী যেন খেপে উঠেছে । গাঢ় কালো পৰিকূল জল ফুলেফেঁপে তরঙ্গায়িত হয়ে ছুটে চলেছে ।
Answer: পাঁচদিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টি হওয়ার আগে নদেরচাঁদ তার প্রিয় নদীটিকে বর্ষার জলে পরিপুষ্ট আর পাঁচটা সাধারণ নদীর মতো পরিপূর্ণতার আনন্দে চঞ্চল হয়ে উঠতে দেখেছিল । এখানে সেই চাঞ্চল্যের কথা বলা হয়েছে ।
সারাবছরই নদীগুলি জলাভাবে অপুষ্ট থাকে । তাদের মধ্যেকার পূর্ণতার আনন্দ যেন অধরা থাকে । কিন্তু বর্ষার নব জলধারায় পুষ্ট হয়ে তাদের মধ্যে আসে পরিপূর্ণতার আনন্দ । তাদের প্রবাহে আসে উল্লাস , চলায় আসে ছন্দ , এসব কিছুকেই পরিপূর্ণতার আনন্দ বলা হয়েছে ।
Answer: চার বছর হল নদেরচাঁদ স্টেশনমাস্টারের দায়িত্বভার গ্রহণ ” চার বছরের চেনা ” করে এই অঞ্চলে এসেছে । তাই নদীটির সঙ্গে তার বলার কারণ চার বছরের চেনা । → নদেরচাদ তার কর্মস্থলের অনতিদূরে অবস্থিত বর্ষার জলে পৃষ্ট নদীটিতে পাঁচদিন আগে পঙ্কিল জলস্রোতে যে – চাঞ্চল্য দেখে গিয়েছিল তাতে ছিল পরিপূর্ণতার আনন্দ । কিন্তু পাঁচদিন আরও বেশি অপরিচিত অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর সে চেনা নদীর রূপই প্রত্যক্ষ করবে ভেবেছিল , কিন্তু নদেরচাঁদ দেখল নদী আরও বেশি ভয়ংকর , আরও বেশি ভয়ংকর ও অপরিচিত হয়ে উঠেছে ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্প অনুসারে নদেরচাঁদ যে – স্টেশনের স্টেশনমাস্টার ছিল , তার এক মাইল দূরে নদীর ওপরে একটি নতুন রং করা ব্রিজ ছিল । সেই ব্রিজের মাঝামাঝি ইট , সুরকি আর সিমেন্ট গাঁথা ধারকস্তঙের কিনারায় বসে সে রোজ নদীকে দেখত । সেদিনও নদেরচাঁদ সেইখানেই গিয়ে বসল । ব্রিজের ধারকস্তম্ভের কিনারায় বসে নদীকে দেখলে নদীবক্ষের ওপর থেকে নদীর বিস্তারসহ সামগ্রিক রূপটাই দর্শকের চোখে ধরা পড়ে । তাই নদেরচাঁদ সেখানে বসত ।
Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে প্রকৃতির প্রতিশোধের কাহিনি শুনিয়েছেন । সভ্যতার অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করতে গিয়ে মানুষ প্রকৃতিকে কাঠগড়ায় তুলেছে । প্রকৃতির স্বাধীনতা খর্ব করে নিজের সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি করতে সে গাছ কেটেছে , নদীতে বাঁধ দিয়ে তার স্বাভাবিক গতি রুদ্ধ করেছে , বাতাসে মিশিয়েছে বিষ । গল্পে নদেরচাঁদ হয়ে উঠেছে মানবসভ্যতার প্রতীক , আর নদী প্রকৃতির প্রতিভূ । তাই ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ আসলে হয়ে উঠেছে প্রকৃতির প্রতিবাদের কাহিনি ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশে চারটে পঁয়তাল্লিশ মিনিটের প্যাসেঞ্জার ট্রেনটির কথা বলা হয়েছে । ট্রেন রওনা হওয়ার পরবর্তী ঘটনা ট্রেনটিকে রওনা করানোর পর স্টেশনমাস্টার নদেরচাঁদ তার নতুন সহকারীকে নিজের প্রস্থান করার কথা জানায় । তারপর আর হয়তো বৃষ্টি হবে না , এই অনুমান ব্যক্ত করে সহকারীর সমর্থন প্রত্যাশা করে । সহকারীও সহমত ব্যক্ত করলে সে নদীর দিকে রওনা হয়ে যায় ।
Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পটির প্রধান ও প্রায় একমাত্র চরিত্র হল নদেরচাঁদ । সে ছাড়া আর একটি যে অতিসংক্ষিপ্ত মানবচরিত্র এই গল্পে দেখা যায় , সে হল তার নদেরচাদের সহকারী চরিত্র সহকারী । লেখকের বিবৃতি থেকেই জানা যায় সহকারী নতুন নিযুক্ত । সে খুব সাধারণ অধস্তন কর্মচারীর মতোই তার ঊর্ধ্বতন পদাধিকারীর প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে তার বক্তব্যে সহমত জ্ঞাপন করেছে ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্প থেকে উদ্ধৃত অংশে নদেরচাঁদ যে – স্টেশনের ব্রিজের স্টেশনমাস্টার , সেখান থেকে এক মাইল দূরে নদীর ওপরে নতুন তৈরি ব্রিজটির কথা বলা হয়েছে । ব্রিজের দিকে হাঁটার কারণ
নদেরচাঁদ ছিল প্রকৃতিপ্রেমিক । বিশেষত নদীর প্রতি তার ছিল অপরিসীম আকর্ষণ । সে প্রায় রোজই নদীর পাশে বসে সময় কাটায় । বিগত পাঁচদিন ধরে মুশলধারায় বৃষ্টির জন্য সে নদীকে দেখতে যেতে পারেনি । তাই কিছুক্ষণের জন্য বৃষ্টি থামতেই সে নদীকে দেখার উদ্দেশ্যে রওনা হয় ।
Answer: চঞ্চলমতি শিশুদের ধৈর্য খুবই কম । খুব অঙ্গেই তাদের ” ছেলেমানুষের মতো ধৈর্যচ্যুতি ঘটে । নদেরচাঁদও একটানা পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণের ফলে নদীকে দেখতে না পেয়ে অধৈর্য হয়ে পড়ে । বয়সের তুলনায় তার এই অধৈর্যকে লেখক ছেলেমানুষির সঙ্গে তুলনা করেছেন । → শৈশব থেকেই নদীর সঙ্গে নদেরচাঁদের সখ্য । তাঁর কর্মস্থলের নদেরচাদের কাছাকাছি নদীটিকে প্রতিদিন দেখতে যেত । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বর্ষণে যেতে না পারায় নদীটির চেহারা ঔৎসকোর কারণ কেমন হয়েছে তা দেখার জন্য সে উৎসুক হয়েছিল ।
Answer: আকাশ মেঘাচ্ছন্ন এবং যে – কোনো মুহূর্তে বৃষ্টি নামার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র নদীর প্রতি অমোঘ আকর্ষণের জন্য নদেরচাদকে নদী দেখতে যেতেই ব — এই ভাবনাটি বোঝাতেই ‘ তা হোক ’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ।
উক্তিটির মধ্যে দিয়ে নদেরচাঁদের একগুঁয়েমি ও ছেলেমানুষি প্রকাশ পেয়েছে । পাঁচ দিনের একটানা বর্ষণে তার নদী বক্তার প্রকাশিত দর্শনে সাময়িক ছেদ পড়লেও বৃষ্টি থামার সঙ্গে মনোভাব সঙ্গে তার নদী দেখার বাসনা তীব্র আকার ধারণ করে ।
Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের মুখ্য চরিত্র যার না – বাচার নদেরচাদ নদীকে না দেখলে বাঁচবে না বলা হয়েছে । নদেরচাঁদ জন্ম থেকেই নদীর পাশে বড়ো হয়েছে । নদী তার জীবনে শ্বাসপ্রশ্বাসের মতোই মূল্যবান । নদীকে ছেড়ে সে কখনও থাকেনি । এমনকি , বরাতজোরে তার কর্মক্ষেত্রে সে নদীকে পাশে পেয়েছে । তাই নদীর প্রতি তার আকর্ষণ যেন পাগলামিতে পরিণত হয়েছে । এই কারণে নদীকে না দেখলে সে বাঁচবে না ।
Answer: বক্তার মনোভাবের পরিচয় উত্তর আলোচ্য উক্তিটি থেকে ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের মুখ্যচরিত্র নদেরচাদের নদীর প্রতি মুগ্ধতা ও ভালোবাসা ব্যক্ত হয়েছে । আজন্ম নদীর পাশে মানুষ হওয়া নদেরচাঁদ নদীর প্রতিটি ওঠাপড়া , প্রতিটি পরিবর্তন দেখে আনন্দ পেত । বর্ষার প্রবল জলধারা তার বিশীর্ণা ক্ষীণকায়া নদীকে যে কী অপরুপ রূপ দিয়েছে , তা দেখার জন্য সে পাগলপারা হয়ে উঠেছিল । পাঁচ দিনব্যাপী প্রবল বৃষ্টিপাত নদীকে পরিপুষ্ট করে তাকে অপরূপ রূপ দিয়েছিল ।
Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পে রেলের উঁচু বাঁধের দু – পাশের মাঠঘাট অতিবৃষ্টিতে জলে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল । নদেরচাঁদ তা দেখতে দেখতেই নদেরচাদ যা দেখেছিল । যাচ্ছিল । নদীর বর্ষণপুষ্ট মূর্তি কল্পনার কারণ → নদীর প্রতি নদেরচাদের ছিল অপরিসীম আকর্ষণ । পাঁচদিনের টানা বৃষ্টির জন্য সে নদীকে দেখতে যেতে পারেনি । তাই সে নদীকে দেখার জন্য উন্মত্তপ্রায় হয়ে উঠেছিল । পাঁচদিনের অতিবৃষ্টি তার প্রতিদিনের চেনা ক্ষীণকায়া নদীটিকে কী মূর্তি দান করেছে , সে কথাই সে কল্পনা করছিল ।
Answer: নদেরচাঁদ নদীকে না দেখে একদিনও থাকতে পারত না । নদী ‘ এত বেশি মায়া’ বলার কারণ দেখার নেশা তার যেন পাগলামিতে পরিণত হয়েছিল । তাই তার এই পাগলামিকে ‘ এত বেশি মায়া ‘ বলা হয়েছে ।
‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পানুসারে , ত্রিশ বছর বয়সের যে – কোনো ব্যক্তি দৈহিক ও মানসিকভাবে যথেষ্ট প্রাপ্তবয়স্ক ও প্রাপ্তমনস্ক । প্রশ্নোবৃত মায়া অস্বাভাবিক কেন নদীর জন্য নদেরচাদের শিশুসুলভ আকুতি তার বয়সের মানুষের মধ্যে সাধারণত দেখা যায় না । তাই এই কথা বলা হয়েছে ।
Answer: নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের মুখ্যচরিত্র নদেরচাঁদ যে অখ্যাত , অনামা স্টেশনের স্টেশনমাস্টার , সেই স্টেশনটি সম্পর্কে ‘ ছোটো ’ ও ‘ তুচ্ছ ‘ বিশেষণ দুটি ব্যবহার করা ‘ ছোটো ‘ ও ‘ তুচ্ছ ‘ হয়েছে । প্রসঙ্গের উল্লেখ → নদেরচাঁদ যথেষ্ট প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও নদীর প্রতি তার আকর্ষণ ছিল লাগামছাড়া । নদীকে নিয়ে তার শিশুসুলভ আচরণ প্রসঙ্গে লেখক বলেছেন যে স্টেশন যত ছোটোই হোক স্টেশনমাস্টারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন নদেরচাঁদের নদীকে নিয়ে এই পাগলামি সাজে না । এই প্রসঙ্গে আলোচ্য উদ্ধৃতিটি ব্যবহৃত হয়েছে ।
Answer: পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর অভ্যাসবশত নদেরচাঁদ নদীর রূপ দেখতে যায় । ধারকস্তম্ভের শেষ প্রান্তে বসে নদীর রূপ দেখে সে বেশ ‘ ভীষ মধুর ’ – বৈপরীত্যসূচক ডিও বিশোষণ , আমোদিত বোধ করে । আবার আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে । সেই বৃষ্টির শব্দ আর নদীর জলের গর্জন মিলেমিশে তাকে বিবশ করে । নদীর উন্মত্ততা ও বৃষ্টির প্রাবল্য তার মনে আতঙ্কের সঞ্চার করে । ভয়ংকর জলতরঙ্গের চাপা গর্জন আর বৃষ্টির শব্দ মিলেমিশে যে – ঐক্যতান সৃষ্টি করেছিল , তা শ্রুতিমধুর হলেও ভয়ংকর এই শব্দের অভিঘাত নদেরচাঁদকে বিবশ ও আতঙ্কিত করে তুলেছিল । শব্দের এই দ্বিমুখী ক্রিয়ার জন্যই ‘ ভীষণ মধুর ‘ বিশেষণটি ব্যবহৃত হয়েছে । শুনে সর্বাঙ্গ অবশ , অবসন্ন হয়েছে → ভয় মানুষকে অতিসক্রিয় বা নিষ্ক্রিয় করে দেয় । সক্রিয়তা তাকে বিপদস্থল থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায় আর নিষ্ক্রিয়তা তাকে সেখানেই আতঙ্কের গভীরে নিমজ্জিত করে । নদীর ধ্বংসাত্মক ভয়াবহতা , তার রুষ্ট গর্জন ও বৃষ্টির প্রাবল্য সব কিছু মিলিয়ে যে – ভয় নদেরচাঁদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছিল , তা তাকে বিবশ ও অবসন্ন করে তুলেছিল । সে পরিস্থিতির প্রতিকূলতা উপলব্ধি করেও তাই সেখান থেকে উঠে যেতে পারেনি । কেন – না তার মানসিক ও শারীরিক জোর সে মুহূর্তে ছিল না ।
Answer: যুগে যুগে বর্ষার আবহের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক স্বীকৃত । এই ব্যাকুলতার আভাস মেলে কালিদাস , রবীন্দ্রনাথ কিংবা বৈষুব ‘ অবিভ্রান্ত বর্ষণের সঙ্গে সুর মিলাইয়া পদকর্তাদের লেখা কাব্যের ছত্রে ছত্রে । মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের নায়ক নদের চাঁদ দীর্ঘদিন কর্মসূত্রে ঘরছাড়া হওয়ার কারণে স্ত্রী বিচ্ছিন্ন । তাই পাঁচ দিন ধরে একটানা বৃষ্টি তার বিরহব্যথাকে আরও প্রবল করে তুলেছিল । বৃষ্টির সুরের কোমলতা মাখিয়ে সে স্ত্রীকে পাঁচ পৃষ্ঠার একটি চিঠি লিখেছিল । চিঠির পরিণতির পিছনে প্রকৃত কারণ বহু যত্নে ও আবেগে স্ত্রীকে লেখা চিঠি নদেরচাঁদ ছিঁড়ে ছিঁড়ে নদীর ফেনিল জলস্রোতে ভাসিয়ে দিয়েছিল । এর কারণ এই নয় যে , সে চিঠিটি স্ত্রীর হাতে পৌঁছে দিতে উৎসাহী ছিল না । বরং এর কারণটি ছিল অত্যন্ত শিশুসুলভ । সে ভয়ংকরী নদীর উত্তাল জলরাশির সঙ্গে খেলায় মেতেছিল । খেলার অন্য কোনো সরঞ্জাম না – পেয়ে নদেরচাঁদ পকেট থেকে চিঠিটি বের করে ছিঁড়ে নদীর জলে ভাসাতে থাকে । নদী কীভাবে দ্রুততার সঙ্গে চিঠিগুলি ভাসিয়ে নিয়ে যায় , তাই দেখাই তার উদ্দেশ্য ছিল । এসবের পিছনেই ছিল নদেরচাঁদের নদী সম্পর্কে অস্বাভাবিক পাগলামি । মানুষের কাছে তার প্রিয়জন সবচেয়ে আপন । কিন্তু নদেরচাঁদের আচরণ বুঝিয়ে দেয় যে , তার কাছে নদীর চেয়ে বেশি আপনজন আর কেউ নেই । এখানে নদী আসলে তার প্রেয়সীতে রূপান্তরিত হয় ।
Answer: পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর নদীর রূপ দেখে নদেরচাঁদ প্রথমে আমোদিত হলেও , অল্পক্ষণ পরেই তার মন থেকে ছেলেমানুষি উধাও হয়ে গিয়েছিল । আবার বৃষ্টি শুরু হওয়ায় স্রোতপূর্ণ নদীর শব্দ ও বৃষ্টির আওয়াজ মিলেমিশে এমন একটা শব্দের সৃষ্টি করল , যা শুনে সে আতঙ্কিত ও আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল । সেখান থেকে উঠে যাওয়ার ক্ষমতাটুকুও সে হারিয়ে ফেলল । প্রকৃতির রোষের কাছে মানুষ অসেরচাদের দিশেহারা যে কতটা অসহায় তার একটা ভীতিময় অনুভূতি হয়ে পড়ার কারণ নদেরচাদের চেতনা ও অবচেতন মনের মধ্যেকার ফারাক ঘুচিয়ে দিল । এমন সময় একটা ট্রেন চলে যাওয়ার আকস্মিক শব্দের মতন বেদনাদায়ক আঘাতে তার ঘোর ভাঙে । কিছুক্ষণের জন্য তার ভারাক্রান্ত মন তাকে দিশেহারা করে তোলে ।
→ মানুষ যখন আতঙ্কিত হয় তখন তার মধ্যে দু – ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যায় । হয় সে অতিসক্রিয় হয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালায় , নয় সে স্থির ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে । এক্ষেত্রে নদীর গর্জন এবং বৃষ্টির শব্দ তার মনে যে – প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছিল , তাতে সে হতভম্ব আর অবসন্ন হয়ে পড়েছিল । এইজন্য নদেরচাদ ব্রিজের ওপর থেকে উঠে যেতে চাইলেও তার শরীর – মন তাতে সংগত করতে পারেনি । কিন্তু ট্রেন চলে যাওয়ার মতো কোনো একটি প্রচণ্ড শব্দে যখন তার সংবিৎ ফিরল , তখন সে অতিকষ্টে উঠে দাঁড়াল ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে আমরা দেখি , নদীবক্ষে নির্মিত যে – ব্রিজের ধারকস্তম্ভের প্রান্তে বসে নদেরচাদ ভয়ংকরী নদী জলরাশির উন্মাদনা লক্ষ করছিল , তার মাত্র কয়েক হাত নীচেই ছিল বিপুল বিস্ফারিত জলরাশি । এরপর প্রবল বৃষ্টি নামলে নদীর জল ও বৃষ্টিপাতের শব্দ মিলেমিশে যে চাপা গর্জন সৃষ্টি করে , তা নদেরচাদকে আতঙ্কে অবশ করে তোলে ।
নদেরচাঁদ এক অদ্ভূত অবসন্নতা আর বিবশতায় আক্রান্ত হয়ে পড়ে । তার মন জানত , সেখান থেকে উঠে চলে যাওয়াই যথাযথ সিদ্ধান্ত । কিন্তু তার শরীর যেন কিছুতেই সায় দিচ্ছিল না । তার এই আতঙ্কের উৎস ছিল সংবেদনশীল মন , সে বুঝে গিয়েছিল নদীর এই ভয়াবহতার কারণ হল , মানবসভ্যতার বিরুদ্ধে প্রকৃতির যুদ্ধঘোষণা । মানুষ যুগ যুগ ধরে প্রকৃতিকে বশ মানাতে গিয়ে এভাবেই নিজের বিপদ ডেকে এনেছে । প্রকৃতিপ্রেমিক নদেরচাঁদ নদীর এই বিদ্রোহ অনুভব করেছিল । সে বুঝেছিল , এই ক্ষিপ্ত নদী প্রতিশোধ নিতে বাঁধ ও ব্রিজ ভেঙে নিজের পথ পরিষ্কার করে নেবে । আর সেই বিক্ষুব্ধ নদীর সামনে মানবসভ্যতার একমাত্র প্রতিনিধিরূপে নদেরচাঁদ সন্ত্রস্ত আর আতঙ্কিত বোধ করে ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে আমরা দেখি ছোটোবেলা থেকেই নদেরচাদের সমস্ত কিছু নদীকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে । নদীর ভাষা সে বুঝবে এটাই স্বাভাবিক । বর্ষণপুষ্ট উত্তাল নদীকে সে ক্ষিপ্ত ও বিক্ষুব্ধ বলে চিনতে পেরেছিল । মানুষের তৈরি বাঁধ এবং ব্রিজ নদীকে শীর্ণকায় করে তোলায় নদী যে তাতে ক্ষুব্ধ , নদীর বিদ্রোহের , কারণ নদেরচাঁদ তার সংবেদনশীল মন দিয়ে তা উপলব্ধি করেছিল । মানুষের প্রযুক্তির কাছে অবদমিত প্রকৃতি যেন নদীর মাধ্যমে প্রতিশোধ নিতে চাইছে । নদেরচাঁদ বুঝেছিল , প্রকৃতির প্রতি মানুষের অবিচারই মানবসভ্যতাকে একদিন ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবে ।
নদেরচাঁদ সংবেদনশীল মানুষ । নদীকে নিয়ে তার কৌতূহল পাগলামির পর্যায়ের হলেও নদীকে নিয়ে তার অন্তর্দৃষ্টি তাকে অনন্যপূর্ব সিদ্ধান্তে উপনীত করে । প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের বলে বলীয়ান নদেরচাদ যেভাবে দাম্ভিক মানুষ প্রকৃতিকে বশে আনতে নদীর বুকে ব্রিজ বানিয়েছে , বাঁধ বেঁধেছে । এই অন্যায়ের প্রতিবাদ যেন ধ্বনিত হয় নদীর গর্জনে , সব কিছুকে ভেঙে ফেলার চেষ্টায় । নদীর এই কাজকে যেন সমর্থন করে চলে প্রকৃতির বৃষ্টি , মেঘ ও অন্ধকার । প্রকৃতির এইসব আয়োজনের দিকে লক্ষ রেখে নদীর বিদ্রোহকে নদেরচাঁদ অন্তরাত্মা দিয়ে অনুভব করেছে ।
Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পটি মনস্তাত্ত্বিক আঙ্গিকে লেখা । গল্পটি আধুনিক মানুষের পরিবেশচেতনার ইঙ্গিতবাহী । মানুষ নগরায়ণের জন্য দ্রুত বন কেটে মরুভূমিতে আহ্বান জানাচ্ছে , বাতাসে মেশাচ্ছে বিব । নদীর বুকে বাঁধ বেঁধে , ব্রিজ গড়ে সে বিদীর্ণ করছে নদীবক্ষ মানুষ বুঝতে পারছে না প্রকৃতি ও পরিবেশকে ধ্বংস করে যে মৃত্যুফাদ সে রচনা করছে সেখান থেকে তার বেরিয়ে আসা মুশকিল ।
যন্ত্রনির্ভর মানবসভ্যতা বনাম প্রকৃতির প্রতিনিধি – মনস্তাত্ত্বিক গল্পটির দুটি প্রতিপক্ষ- একদিকে নদেরচাঁদ , যে যন্ত্রনির্ভর মানবসভ্যতার প্রতিনিধি ; অন্যদিকে নদী , যে কিনা প্রকৃতির প্রতিনিধি । গল্পে নদেরটাদের নদীপ্রীতি আসলে সমানুভূতির নয় সহানুভূতির । নদীর খেপে ওঠার মধ্যে নদেরচাঁদ প্রত্যক্ষ করেছিল বন্দিনি নদীর মুক্তির আকাঙ্ক্ষা । আর এটাই তাকে আতঙ্কিত করে তোলে । তাই সে প্রতিহিংসার হাত থেকে বাঁচতে পালাতে চেয়েছে । কিন্তু মানুষের তৈরি প্রযুক্তির জন্য নদেরচাঁদ এতদিন যে – গর্ব প্রকাশ করে এসেছে , সেই প্রযুক্তিরই ফসল ট্রেনের ঢাকার তার প্রাণ যায় । এ যেন আধুনিক সভ্যতার প্রতি এক সতর্কর্তা- নিজের তৈরি ফাঁদে মানুষ যেভাবে নিজেকে জড়িয়ে ফেলছে , তাতে একদিন তার ধ্বংস অনিবার্য । আসলে গল্পে অসহায় নদেরচাদের মৃত্যু সভ্যতার সর্বনাশা পরিণামকেই চিহ্নিত করেছে । প্রকৃতি ও মানুষের সহাবস্থান , প্রকৃতির স্বাভাবিক সাবলীলতা বজায় রেখে উন্নয়ন এবং পরিবেশ আর প্রকৃতির সঙ্গে মিতালি স্থাপন করেই সভ্যতার সত্যিকারের উন্নতি সম্ভব । তাই বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির যে – রূপে প্রকৃতি তার সামঞ্জস্য ফিরে পাবে ও মানুষ নিজেও অগ্রগতির সুবিধা ভোগ করবে , সেই প্রকৃতি – বান্ধব প্রযুক্তিই হল সভ্যতাকে রক্ষা করার একমাত্র পথ ।
Answer: অংশের জন্য 15 নং প্রশ্নের উত্তরের প্রথম অংশ দ্যাখো ।
পাঁচ দিনের অবিশ্রান্ত বর্ষণের ফলে , নদেরচাদের নদীর সঙ্গে দেখা হয়নি । পঞ্চম দিন বিকেলে বৃষ্টির ক্ষণিক বিরতি পেতেই সে বেরিয়ে পড়ে । নদীকে খুব কিন্তু ব্রিজের কাছাকাছি এসে নদীর দিকে দৃষ্টিপাত ভালোবাসার পরিণতি করেই সে স্তম্ভিত হয়ে যায় । উত্তাল ভয়ংকর এই নদীকে তার যেন অচেনা মনে হয় । অভ্যাসমতো ধারকস্তম্ভের শেষপ্রান্তে সে বসে । ক্রমে আবার বৃষ্টি শুরু হয় । নদীস্রোত আর বৃষ্টির মিলিত শব্দে তার ভয় হয় । মনে হয় বন্দিনি নদী আজ বিদ্রোহিনী হয়ে উঠেছে । খ্যাপা নদী ব্রিজকেও বুঝি ভাসিয়ে নিয়ে যাবে । সে অন্ধকারে রেললাইন দিয়ে হেঁটে স্টেশনের দিকে ফিরে চলে । কিন্তু স্টেশনের পৌঁছোনোর আগেই তাকে ৭ নং ডাউন প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি পিষে দিয়ে চলে যায় । এভাবেই প্রাণ দিয়ে নদীকে ভালোবাসার মূল্য চুকোয় নদেরচাঁদ ।
Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে একমাত্র নদেরচাঁদ ছাড়া আর যে – চরিত্রটিকে পাই , সে হল তার নবনিযুক্ত সহকর্মী । এই সহকর্মীটির মুখে দুটি মাত্র সম্মতিজ্ঞাপক বাক্যাংশ আমরা শুনতে পাই । চারটে পঁয়তাল্লিশের ট্রেনটিকে রওনা করিয়ে নদেরচাঁদ যখন তার নতুন সহকর্মীকে নিজের চলে যাওয়ার কথা জানায় , তখন সে মেঘাচ্ছন্ন আকাশের দিকে একবার তাকিয়ে সংক্ষিপ্ত জবাব দেয় , ‘ আজ্ঞে হ্যাঁ । ‘ নবনিযুক্ত কর্মীর মেঘাচ্ছন্ন আকাশের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকানো বুঝিয়ে দেয় যে , বাড়ি ফেরার তাড়া তারও আছে । কিন্তু নদেরচাঁদ তার থেকে উচ্চ পদাধিকারী এবং নতুন চাকরি— এই দুটি কারণে সে বাড়ি ফেরার কথা মুখে আনতে পারেনি । দ্বিতীয়বার নদেরচাঁদ আর হয়তো বৃষ্টি হবে না এই অনুমান ব্যক্ত করে তার সমর্থন প্রত্যাশা করলে , সে বাইরের দিকে একবার তাকিয়ে সম্মতি জানায় । ঊর্ধ্বতন পদাধিকারী ব্যক্তিকে খুশি করাই হয়তো তার উদ্দেশ্য ছিল । কর্তৃপক্ষের হ্যাঁ – তে হ্যাঁ , না – তে না বলাটাও হয়তো তার চাকরির অঙ্গ বলেই সে ধরে নিয়েছিল । তাই মোটের ওপর নবনিযুক্ত সহকর্মী ব্যক্তিটিকে মানুষ হিসেবে নির্বিরোধী ও মুখচোরা ধরনের বলেই মনে হয় ।
Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাদের নদীর সঙ্গে ভীষণ বন্ধুত্ব বলেই , নদীর সামান্য অদর্শনেই সে অস্থির হয়ে উঠত । কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ও বয়সজনিত কারণে , তার এহেন আচরণ ছেলেমানুষির পর্যায়ে পড়ে , এ কথাও সে স্বীকার করত । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জন্য নদীর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়নি , তাই নদীকে দর্শনের জন্য সে উদ্গ্রীব ছিল । সে – কারণেই বিকেলে বৃষ্টি থামতেই সে নদীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল । যাওয়ার সময় তার মনে নানান ভাবের উদয় হয় । পাঁচ দিনের অবিশ্রান্ত বর্ষায় নদী কোন্ অপরূপ সাজে সেজেছে তা দেখার জন্য সে উদ্গ্রীব হয়ে উঠেছিল । রেলের বাঁধ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে নদেরচাঁদ দু – দিকের জলে ভরা মাঠঘাট দেখে , বর্ষণপুষ্ট নদীটির রূপ মনে মনে কল্পনা করার চেষ্টা করল । নদীকে নিয়ে এই পাগলামিতে তার একটু আনন্দই হয়েছিল । নদীর তীরে বড়ো হয়ে ওঠা নদেরচাঁদ নদীর প্রতি তার এই ভালোবাসার কৈফিয়তও তৈরি রাখত । কারণ সে জানত , তার এই আচরণ সকলে স্বাভাবিকভাবে নেবে না । নদীকে দেখতে যাওয়ার পথে সবসময় তার মনে এইসব চিন্তাভাবনাগুলোই ঘুরপাক খাচ্ছিল ।
Answer: নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পটি নদীপ্রেমিক নদেরচাদের তীব্র আবেগ ও আকুলতাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে । গল্পের নিয়ন্ত্রক বা কেন্দ্রীয় চরিত্র যে সে . এবিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই ।
নদেরচাঁদের চরিত্রের যে – দিকটি সবচেয়ে প্রকট , তা হল নদীর প্রতি তার তীব্র আকর্ষণ । নদীর ধারে বড়ো হয়ে ওঠার দরুন নদীর প্রতি তার টান থাকা স্বাভাবিক । তার গ্রামের ক্ষীণকায়া মীর প্রতি তীব্র নদীটিকে সে ভালোবাসত এক অসুস্থ আত্মীয়ার আকর্ষণ মতোই । এমনকী তার কর্মস্থলের কাছের নদীটিকে প্রতিদিন না – দেখেও সে থাকতে পারত না । নদীর প্রতি তার এই টান যে অস্বাভাবিক , তা বুঝলেও এই পাগলামিটা সে উপভোগ করত । আকোপ্রবণতা অস্থিরতা নদেরচাদের নদীর প্রতি ভালোবাসা , বর্ষায় স্ত্রীর বিরহে কাতর হয়ে ওঠা— এগুলি আবেগপ্রবণতার লক্ষণ । আবার বিরহে কাতর হয়ে স্ত্রীকে লেখা চিঠি খেলার ছলে নদীর স্রোতে ভাসিয়ে দেয় নদেরচাঁদ । এ থেকে বোঝা যায় , তার মধ্যে কাজ করে চলে এক অস্থিরতা । তাই অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে পাঁচদিন নদীর কাছে যেতে না পেরে ছটফট করে সে । নদীই যেন নিঃসঙ্গ নদেরচাঁদের প্রেয়সীতে রূপান্তরিত হয় ।
সংবেদনশীলতা নদেরচাঁদ নদীর ভাষা বুঝত । নদীর ভয়ংকরী রূপ দেখে সে বুঝতে পেরেছিল , সভ্যতার নামে প্রকৃতিকে পদানত করলে শেষপর্যন্ত তা ধ্বংসই ডেকে আনবে । তার এই উপলব্ধি প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা ও সংবেদনশীলতারই পরিচয় । তাই সে যে ব্রিজ নিয়ে গর্ব করেছিল , তার প্রয়োজনীয়তা বিষয়েই সংশয় প্রকাশ করে । নদেরচাঁদ যতই আবেগপ্রবণ হোক , নদীর প্রতি তার যতই টান থাকুক , তা কিন্তু কখনোই তার কর্তব্য পালনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না । স্টেশনমাস্টার হিসেবে সে তার দায়িত্ববোধ দায়িত্ব যথাযথভাবেই পালন করে । এইসব মিলিয়ে নদেরচাঁদ একটি ব্যতিক্রমী চরিত্র হিসেবেই উপস্থাপিত হয়েছে । গল্পের শেষে তার নিয়তি – নির্দিষ্ট মৃত্যু যেন মানুষের নিজের তৈরি যন্ত্রসভ্যতার হাতে অসহায় ও করুণ পরিণতির এক আশ্চর্য ভাষ্য হয়ে ওঠে ।
Answer: নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পের নায়ক নদেরচাদের নদীর প্রতি অতিরিক্ত মায়াকে ‘ অস্বাভাবিক ‘ উন্মাদনা ছিল । একটা দিনও সে নদী – অদর্শনে থাকতে পারত না । টানা পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জন্য নদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ না – হওয়ায় সে প্রায় পাগল বলার কারণ হয়ে যায় । ত্রিশ বছর বয়সি নদেরচাঁদের এই আচরণ সাধারণ মানুষের ” কাছে ছেলেমানুষি বলে মনে হত । তা ছাড়া তার মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির এমন আচরণ মোটেই স্বাভাবিক নয় বলেই , এ কথা বলা হয়েছে ।
নদীর প্রতি নদেরচাদের আকর্ষণ ও উন্মত্ততা যে অস্বাভাবিক তা নদেরচাঁদ নিজেও জানত । নিজের এই অস্বাভাবিকতা নিয়ে তার কোনো দুর্ভাবনা ছিল না , বরং সে তা নিয়ে আনন্দই অস্বাভাবিকত্বের উপভোগ করত । আর এই অস্বাভাবিক আচরণের কৈফিয়ত দেওয়ার তাগিদ সে নিজে থেকেই অনুভব করেছিল । কৈফিয়ত হিসেবে সে নিজের নদীর ধারে ও জন্মানো ও বেড়ে ওঠার কথা জানিয়েছে । নদীর সঙ্গে তার আন্তরিকতার কথাও সে বলেছে যে নদীটিকে ঘিরে সে বড়ো হয়েছে সেটি শীর্ণকায় হলেও নদেরচাঁদ অসুস্থ আত্মীয়ার মতো তাকে ভালোবেসেছে এবং মৃত্যুপথযাত্রী আত্মীয়ার জন্য কষ্ট পাওয়ার মতো অনাবৃষ্টিতে প্রায় শুকিয়ে যাওয়া নদীটিকে দেখে ব্যথিত হয়েছে । পরবর্তীকালে কর্মক্ষেত্রের পাশে নদীর উপস্থিতি তাকে আনন্দিত করেছিল ।
Answer: উদ্ধৃত অংশে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ পাগলামি করা ব্যক্তির পরিচয় গল্পে কেন্দ্রীয় চরিত্র নদেরচাদের নদীর জন্য পাগলামির কথা বলা হয়েছে ।
গ্রামবাংলার এক নদীর ধারে নদেরচাদের জন্ম এবং বড়ো হয়ে ওঠা । তাই ছোটোবেলা থেকেই নদী তার বন্ধু । এমনকি কর্মসূত্রে সে যে জায়গায় আসে সেখানেও একটি নদী রয়েছে । ফলে খুব সহজেই সেই নদীও অল্পদিনের মধ্যেই নদেরচাঁদের আপন হয়ে ওঠে । নদীটিকে একটি দিনের জন্যও না – দেখে সে থাকতে পারে না । গ্রীষ্মকালে শুকনো , শীর্ণ ও ক্ষীণকায়া নদীর জন্য সে বেদনা অনুভব করে । আবার বর্ষার জল পেয়ে নদী ফুলেফেঁপে উঠলে নদেরচাঁদের মনেও যেন খুশির জোয়ার আসে । নদীর কাছে সে উজাড় করে দেয় মনের যত কথা । নদী ও নদেরচাঁদ যেন পরস্পরের সুখ – দুঃখের অংশীদার । নদীকে বাঁধ দিয়ে বাঁধলে কষ্ট হয় নদেরচাঁদের । খেলার ছলে নিজের স্ত্রীকে লেখা চিঠির পাতাগুলো সে অনায়াসে ছুড়ে দিতে পারে নদীর জলের জটিল আবর্তে । নদীর প্রতি তার এই টান যে স্বাভাবিক নয় , তা সে বুঝতে পারে , কিন্তু নিজেকে সংযত করতে পারে না , বরং উপভোগ করে নিজের এই পাগলামিকে ।
Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর নদীকে দেখার কথা বলতে গিয়ে লেখক ‘ প্রথমবার ’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন । একটানা বৃষ্টির জন্য পাঁচ দিন নদীর সঙ্গে নদেরচাঁদের দেখা হয়নি । বৃষ্টি সাময়িকভাবে থামতে , সে উন্মত্তের মতো নদীকে দেখতে ছোটে । বর্ষার শুরুতে যে – শীর্ণ নদীকে নদেরচাঁদ কল্লোলিত হয়ে উঠতে দেখেছিল , অতিবর্ষণের পর তার রূপটি কেমন দাঁড়িয়েছে তা দেখবার জন্য সে উৎসুক হয়ে পড়ে । কিন্তু নদীর ধারে গিয়ে সে স্তম্ভিত হয়ে যায় । পাঁচদিনের অতিবর্ষণে নদী এক ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছিল । নদীর জলস্ফীতি ব্রিজের ধারকস্তম্ভে আঘাত পেয়ে আবর্ত রচনা করে ফেনায়িত হয়ে অনেকটা ওপরে উঠে আসছিল । নদীর এই উন্মত্ত রুপ তাকে অবাক করেছিল ।
নদেরচাঁদ প্রথমবার নদীর বর্ষণপুস্টরূপ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল । পাঁচদিন আগেও বর্ষার জলে পরিপুষ্ট নদীর জলস্রোতে যে চাঞ্চল্য সে দেখে গিয়েছিল , সে চাঞ্চল্য ছিল পরিপূর্ণতার । আজ সেই নদী খেপে গিয়ে গাঢ় পঙ্কিল জল ফুলেফেঁপে ফেনায়িত হয়ে ছুটে চলেছে । তাই তার চার বছরের চেনা নদীর মূর্তিকে নদেরচাদের যেন আরও বেশি ভয়ংকর , আরও বেশি অপরিচিত বলে মনে হয় ।
Answer: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ নদীর বিদ্রোহ ’ গল্পের নায়ক নদেরচাঁদ বসার স্থানের সম্পর্কে প্রতিদিন নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজের মাঝামাঝি ইট , সুরকি আর সিমেন্টের গাঁথা ধারকস্তত্ত্বের শেষপ্রান্তে বসে নদীকে প্রত্যক্ষ করত । সেদিনও সে সেখানেই গিয়ে বসেছিল ।
পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জন্য নদেরচাদের নদীদর্শন সাময়িক স্থাগিত থাকলেও , মনে মনে সে নদীকে দেখার জন্য উদ্গ্রীব হয়ে উঠেছিল । তাই বৃষ্টি বন্ধ হতেই সে উদ্গ্রীব হয়ে তার নদী দেখার নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে সেখানে বসে নদেরচাদের দর্শন করা নদীর রূপ পৌঁছেছিল । কিন্তু নদী যেন আজ খেপে গিয়েছে । তার গাঢ় পঙ্কিল জল ফুলেফেঁপে উচ্ছ্বসিত হয়ে ছুটে চলেছে । নদেরচাঁদ তার ক্ষীণস্রোত নদীটির কথা ভাবছিল । তাই তার চার বছরের চেনা নদীটি আরও বেশি ভয়ংকর ও অপরিচিত মনে হল । ব্রিজের মাঝামাঝি ধারকস্তম্ভের ওপর বসে সে দেখল নদীর স্রোত সেই ধারকস্তম্ভে বাধা পেয়ে ফেনিল আবর্ত রচনা করে উপরের দিকে উঠে আসছে । দেখে মনে হয় যেন হাত বাড়িয়ে জলকে স্পর্শ করা যাবে । নদেরচাদের ভারী আমোদ হল । নদীর সঙ্গে খেলার লোভে সে পকেট থেকে স্ত্রীকে লেখা চিঠি বের করে ভাসিয়ে দিতে থাকে । কিন্তু পুনরায় মুশলধারে বৃষ্টি নামায় তার এই উল্লাস আতঙ্কে পরিণত হয় ।
Answer: ‘ নদীর বিদ্রোহ ‘ গল্পে নদেরচাদ নদীকে না – দেখে একটি দিনও থাকতে পারে না । পাঁচ দিন অবিশ্রান্ত বৃষ্টির পর তাই সে নদীকে দেখার জন্য বেরিয়ে পড়ে । ব্রিজের কাছে এসে নদীকে দেখে সে স্তম্ভিত হয়ে যায় । বৃষ্টির পর নদী যেন খেপে গেছে । নদেরচাদ এতক্ষণ ক্ষীণস্রোতা নদীর কথা ভাবছিল , তাই চেনা নদীটির মূর্তি তার আরও বেশি ভয়ংকর ও অপরিচিত লাগছিল । প্রতিদিনের অভ্যাসমতো সে ধারবস্তত্ত্বের শেষ প্রান্তে বসে নদীকে দেখল । নদীর স্রোত সেই স্তস্তে আঘাত পেয়ে আবর্তাকারে ফেনায়িত হয়ে উপরের দিকে উঠে আসছে । তার মনে হল ইচ্ছা করলেই স্পর্শ করা যাবে । আমোদিত নদেরচাদ খেলার ছলে স্ত্রীকে লেখা চিঠি স্রোতের মধ্যে ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলছিল । ঘণ্টা তিনেক পর আবার আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামল । সেই বৃষ্টির শব্দ আর নদীর জলের গর্জন মিলেমিশে তাকে আতঙ্কিত ও অবসন্ন করে তুলল , ক্রমে তার ছেলেমানুষি উধাও হয়ে গেল । তার মনে হল নদী যে – কোনো সময় ব্রিজ ও বাঁধ ভেঙে নিজেকে মুক্ত করতে পারে । প্রকৃতির স্বাভাবিকতাকে নষ্ট করে মানবসভ্যতার যান্ত্রিক উন্নয়নকে নদী যেন ধ্বংস করতে চায় । সময়ের পরিবর্তনে পরিস্থিতির বদলের সম্ভাবনাকে সমর্থন করে ; লেখক স্বল্প ব্যবধানে উক্তি দুটি করতে বাধ্য হয়েছেন ।
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Bengali Suggestion 2023 Click Here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik English Suggestion 2023 Click Here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Geography Suggestion 2023 Click Here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik History Suggestion 2023 Click Here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Physical Science Suggestion 2023 Click Here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Life Science Suggestion 2023 Click Here
আরোও দেখুন:-
Madhyamik Mathematics Suggestion 2023 Click Here
PDF Name : মাধ্যমিক বাংলা – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF
Price : FREE
Download Link : Click Here To Download
West Bengal Madhyamik Bengali Suggestion PDF prepared by expert subject teachers. WB Madhyamik Bengali Suggestion with 100% Common in the Examination.
West Bengal Madhyamik Bengali Suggestion Download. WBBSE Madhyamik Bengali short question suggestion. Madhyamik Bengali Suggestion PDF download. Madhyamik Question Paper Bengali.
মাধ্যমিক বাংলা (Madhyamik Bengali) নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর।
মাধ্যমিক বাংলা পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক বোর্ডের (WBBSE) সিলেবাস বা পাঠ্যসূচি অনুযায়ী দশম শ্রেণির বাংলা বিষয়টির সমস্ত প্রশ্নোত্তর। সামনেই মাধ্যমিক পরীক্ষা, তার আগে winexam.in আপনার সুবিধার্থে নিয়ে এল মাধ্যমিক বাংলা সাজেশান – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর । বাংলাে ভালো রেজাল্ট করতে হলে অবশ্যই পড়ুন । আমাদের মাধ্যমিক বাংলা ।
আমরা WBBSE মাধ্যমিক পরীক্ষার বাংলা বিষয়ের – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর – সাজেশন নিয়ে নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর নিয়ে নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায়চনা করেছি। আপনারা যারা এবছর দশম শ্রেণির বাংলা পরীক্ষা দিচ্ছেন, তাদের জন্য আমরা কিছু প্রশ্ন সাজেশন আকারে দিয়েছি. এই প্রশ্নগুলি পশ্চিমবঙ্গ দশম শ্রেণির বাংলা পরীক্ষা তে আসার সম্ভাবনা খুব বেশি. তাই আমরা আশা করছি Madhyamik বাংলা পরীক্ষার সাজেশন কমন এই প্রশ্ন গুলো সমাধান করলে আপনাদের মার্কস বেশি আসার চান্স থাকবে।
মাধ্যমিক বাংলা, মাধ্যমিক বাংলা, মাধ্যমিক দশম শ্রেণীর, নবম শ্রেণি বাংলা, দশম শ্রেণি বাংলা, নবম শ্রেণি বাংলা, দশম শ্রেণি বাংলা, ক্লাস টেন বাংলা, মাধ্যমিকের বাংলা, বাংলা মাধ্যমিক – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায়, দশম শ্রেণী – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায়, মাধ্যমিক বাংলা নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায়, ক্লাস টেন নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায়, Madhyamik Bengali – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায়, Class 10th নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায়, Class X নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায়, ইংলিশ, মাধ্যমিক ইংলিশ, পরীক্ষা প্রস্তুতি, রেল, গ্রুপ ডি, এস এস সি, পি, এস, সি, সি এস সি, ডব্লু বি সি এস, নেট, সেট, চাকরির পরীক্ষা প্রস্তুতি, Madhyamik Bengali Suggestion , West Bengal Madhyamik Class 10 Bengali Suggestion, West Bengal Secondary Board exam suggestion , WBBSE , মাধ্যমিক সাজেশান, মাধ্যমিক সাজেশান , মাধ্যমিক সাজেশান , মাধ্যমিক সাজেশন, মাধ্যমিক বাংলা সাজেশান , মাধ্যমিক বাংলা সাজেশান , মাধ্যমিক বাংলা , মাধ্যমিক বাংলা, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, Madhyamik Bengali Suggestion Bengali , মাধ্যমিক বাংলা – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF PDF, মাধ্যমিক বাংলা – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF PDF, মাধ্যমিক বাংলা – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF PDF, মাধ্যমিক বাংলা – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF PDF, মাধ্যমিক বাংলা – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF PDF, মাধ্যমিক বাংলা – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF PDF,মাধ্যমিক বাংলা – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF PDF, মাধ্যমিক বাংলা – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF, Madhyamik Class 10 Bengali Suggestion PDF.
এই (মাধ্যমিক বাংলা – নদীর বিদ্রোহ (গল্প) মানিক বন্দোপধ্যায় – সাজেশন | Madhyamik Bengali Suggestion PDF PDF) পোস্টটি থেকে যদি আপনার লাভ হয় তাহলে আমাদের পরিশ্রম সফল হবে। আরোও বিভিন্ন স্কুল বোর্ড পরীক্ষা, প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষার সাজেশন, অতিসংক্ষিপ্ত, সংক্ষিপ্ত ও রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (All Exam Guide Suggestion, MCQ Type, Short, Descriptive Question and answer), প্রতিদিন নতুন নতুন চাকরির খবর (Job News in Bengali) জানতে এবং সমস্ত পরীক্ষার এডমিট কার্ড ডাউনলোড (All Exam Admit Card Download) করতে winexam.in ওয়েবসাইট ফলো করুন, ধন্যবাদ।
একাদশ শ্রেণীর সমস্ত বিষয় সাজেশন ২০২৩ Class 11 All Subjects Suggestion 2023 PDF Download একাদশ…
একাদশ শ্রেণীর গণিত সাজেশন ২০২৩ Class 11 Mathematics Suggestion 2023 PDF Download একাদশ শ্রেণীর গণিত…
একাদশ শ্রেণীর জীববিদ্যা সাজেশন ২০২৩ Class 11 Biology Suggestion 2023 PDF Download একাদশ শ্রেণীর জীববিদ্যা…
একাদশ শ্রেণীর রসায়ন সাজেশন ২০২৩ Class 11 Chemistry Suggestion 2023 PDF Download একাদশ শ্রেণীর রসায়ন…
একাদশ শ্রেণীর পদার্থবিদ্যা সাজেশন ২০২৩ Class 11 Physics Suggestion 2023 PDF Download একাদশ শ্রেণীর পদার্থবিদ্যা…
একাদশ শ্রেণীর সমাজবিজ্ঞান সাজেশন ২০২৩ Class 11 Sociology Suggestion 2023 PDF Download একাদশ শ্রেণীর সমাজবিজ্ঞান…